মেহেরুল ইসলাম মোহন (লালপুর)নাটোরঃ মাথা গোঁজার ঠাঁই নেই অসহায় হালিমা বেগম ও লালন সরদার দম্পতির। লালপুর উপজেলায় ভূমিহীনদের কয়েক ধাপে ঘর দেয়া হলেও জোটেনি হালিমা-লালন দম্পতির ভাগ্যে।ঘুরছে দ্বারে দ্বারে।
জানা যায়,লালপুর উপজেলার বিলমাড়ীয়া ইউনিয়নের মোহরকয়া গ্রামের মা হারা লালন সরদারের সাথে মা-বাবা হারা হালিমা।
ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় জন্ম নেয়া হালিমা বেগম ছোট বেলায় মা-বাবাকে হারিয়ে অন্যের বাসা বাড়িতে কাজ করে বড় হয়েছে।নিজের আত্মীয়-স্বজন নেই।সুখে দুঃখের খোঁজ কে নিবে এমনভাবে-ই নিজের কষ্টের কথা বলতে বলতে দু চোখের পানি গড়িয়ে বুকের মধ্যে থাকা কষ্ট দুরে ঠেলে দিচ্ছে।
এ দিকে হালিমার স্বামীও লালন সরদার ছোট বেলায় মাকে হারিয়ে সৎ মায়ের ঘরেই নানা কষ্টের মধ্য বড় হয়েছে। ঢাকায় রাজমিস্ত্রীর কাজে গিয়ে ১৩ বছর আগে বিয়ে করে হালিমাকে।কখনো ভাড়া , কখনো অন্যের বাড়িতে বসবাস করে।বিয়ের পরে তাদের কোলজুড়ে এসেছে ২ টি মেয়ে।বড় মেয়ে লামিয়া এবার ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ও ছোট মেয়ে সুমাইয়া শিশু শ্রেণীতে পড়ছে। মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় কয়েকটি ধাপে লালপুর উপজেলায় ভূমিহীনদের মাঝে ঘর হস্তান্তর করা হলেও হালিমার ভাগ্যে জোটেনি সেই ঘর।
এ বিষয়ে হালিমা বলেন , শ্বশুড়ের একটি ছাপরা ঘরের সাথে ৩ টা টিন বেঁধে কোন রকম থাকি। বড় মেয়েকে অন্যের বাড়িতে রাতে রেখে আসি। রাত আসলে মনে হয় আত্মহত্যা করি। আবার ভাবি দুনিয়ায় আমার কেউ নাই,মেয়ে দুটিকে নিয়ে কষ্টের পর সুখ আসতে পারে।
লালন সরদার বলেন , আমার জায়গা জমি নাই , ছোট বেলায় মাকে হারিয়েছি।সে কষ্ট বুকে নিয়ে এতিম অসহায়কে বিয়ে করেছি। সরকার ঘর দিচ্ছে,যাদের টাকা আছে ঘর আছে,জমি আছে তারাই ঘর পাইছে।
তিনি আরও বলেন, ইউএনও"র পা ধরে আমার বউ কেঁদেছে তার পরেও একটি ঘর দিলনা।আমার মেয়ের পড়াশুনা করার জন্য একটা ঘর দরকার।
বিলমাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছিদ্দিক আলী মিষ্টু বলেন, অসহায় পরিবারের জন্য আগামীতে সুযোগ পেলেই লালন-হালিমা দম্পত্তির জন্য ঘর বরাদ্দের ব্যবস্থা করা হবে।
এ ব্যাপারে লালপুর উপজেলা নিবার্হী অফিসার শামীমা সুলতানার সাথে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি ।
Tags
ফিচার
