স্টাফ রিপোর্টাসঃসিরাজগঞ্জে টানা বর্ষণ ও যমুনা নদীর পানির তীব্র স্রোতে ঘূর্ণাবর্তের সৃষ্টি হয়ে সিরাজগঞ্জ শহররক্ষা বাঁধের নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় বুধবার দুপুরে ভাঙন দেখা দেয়। মুহূর্তের মধ্যে বাঁধের প্রায় দেড়’শ মিটার নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে শহরবাসী। পরে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তাৎক্ষনিক পদক্ষেপে আপাতত সে ভাঙন ঠেকানো গেছে। ভাঙন শুরু হওয়ার পর থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত ঘটনাস্থলে বালু ভর্তি জিও ব্যাগ নিক্ষেপ অব্যাহত রয়েছে।
জানা যায়, সিরাজগঞ্জ শহরকে রক্ষার জন্য ১৯৯৭ সালে ১’শ বছরের স্থায়িত্ব নিয়ে নির্মাণ করা হয় সিরাজগঞ্জ শহর রক্ষা বাঁধ। ২ দশমিক ৫ কিলামিটার দীর্ঘ এ বাঁধে মোট পাঁচবার দেখা দেয়। ৩৭৫ কোটি টাকা ব্যয়ে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হুন্দাই লিমিটেড বাঁধটি নির্মাণ করে। ১৯৯৭ সালে বাঁধের দায়িত্ব বুঝে নেয় স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড। এরপর ২০০৯ সালের ১০ জুলাই প্রথম ভাঙন দেখা দেয়। দ্বিতীয় বার ভাঙে একই বছরের ১৭ জুলাই। ২০১০ সালের ১৬ জুলাই তৃতীয় বার। এরপর ২০১১ সালের ১৮ জুলাই চতুর্থবার এবং সবশেষ ২০২১ সালের ২৯ জুন পঞ্চম বারের মতো বাঁধটিতে ভাঙন দেখা দেয়।
জেলা স্বার্থ রক্ষা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ডা. জহুরুল হক রাজা বলেন, বাঁধটি রক্ষনাবেক্ষন ও পর্যক্ষেনের জন্য যে সক্ষমতা দরকার তা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নেই। এক সময় সিরাজগঞ্জে বিআরই(ব্রক্ষ্মপুত্র রিভার ইনব্যাংকমেন্ট) অফিস ছিলো। তারা আধুনিক যন্ত্রপাতি ও অভিজ্ঞ লোকবল দিয়ে বাঁধ পর্যবেক্ষন ও রক্ষনাবেক্ষন করতো। অথচ, সে অফিসটি সিরাজগঞ্জ থেকে সুনামগঞ্জে নেয়া হয়েছে। যে কারণে বারবার শহর রক্ষা বাঁধটিতে ভাঙন দেখা দেয়। আতংকগ্রস্ত হয়ে পড়ে শহরবাসী।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. জাকির হোসেন জানান, শহর রক্ষা বাঁধের ভাঙন অংশ বুধবার সকাল থেকে শতভাগ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। মঙ্গলবার ভাঙন শুরুর পর থেকে একটানা বালু ভর্তি জিও ব্যাগ নিক্ষেপ করা হচ্ছে। যা এখনও অব্যাহত রয়েছে। তিনি আরও জানান, বুধবার যমুনার পানি বিপদ সীমার ২.২৫ মিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. নাসির উদ্দিন জানান, রক্ষনাবেক্ষন ও পর্যবেক্ষনের জন্য যথেষ্ট সক্ষমতা রয়েছে। ২০১৭সালে বিআরই অফিসের শুধু সাইন বোর্ডটি এখান থেকে চলে গেছে। যন্ত্রপাতি সব সিরাজগঞ্জেই রয়ে গেছে। এসব যন্ত্রপাতি অপারেট করার জন্য যথেষ্ট জনবলও রয়েছে।
