সাগর নোমাণী ব্যুরো প্রধান , রাজশাহীঃ রাজশাহীতে ভাবনা রিয়েল এষ্টেট কোম্পানির স্বত্বাধিকারী এমদাদুল হক রোকন(৪৮), মোতাহের হোসেন বকুল(৪০) ও আবুল বাশার তালুকদার মামুন (৪১) নামে তিন ব্যাক্তির বিরুদ্ধে জমি কেনায় প্রতারনার অভিযোগ উঠেছে।
রোকন, বকুল ও মামুনের বিরুদ্ধে ভুক্তভোগী পরিবারের ফারজানা হক'র করা মামলার বিবরনে বলা হয়, তপশীল বর্ণিত সম্পত্তির মালিক ও দখলদার তিনি নিজে ও তার ভাই বোন। বর্ণিত সম্পত্তিটি তারা ভোগ দখল করে আসছেন। এ অবস্থায় বকুল সম্পত্তিটি কেনার জন্য তাদের সাথে ৩০ লাখ টাকা দাম নির্ধারণ করে ২ লাখ টাকা বায়না হিসাবে দেয়ার কথা বলে গত ১১ এপ্রিল'১৭ তারিখে ১২২/১৭ রেজিঃ বায়না দলিল মূলে আমাদের সাথে চুক্তিবদ্ধ হন। তারপর বিভিন্ন সময়ে তারা ২১ জুন''১৭ প্রথম বারে এক লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা এবং সর্বশেষ ২২ জানুয়ারি'২০ ৬০ হাজার টাকা-সহ তফসিল বর্ণিত সম্পত্তি বাবদ মোট ১৫ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। এরপর গত ৪ ফেব্রুয়ারি'২০ তারা আমাদের কাছ থেকে তপশীল বর্ণিত সম্পত্তি রেজিস্ট্রি দলিল সম্পাদন গ্রহন করেন। রেজিস্ট্রির দিন তারা আমাদেরকে বাঁকি ১৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা প্রদান করেননি। আমরা বাঁকি টাকা ছাড়া রেজিস্ট্রি দিব না বললে বকুল আমাদেরকে বলেন , আপনারাো যদি এই জমি আজ রেজিস্ট্রি দেন তাহলে আমরা আগামীকাল তিন লাখ টাকার একটি চেক এবং ভাবনা রিয়েল এষ্টেট এর ৩ কাঠার একটি প্লট আপনাদেরকে রেজিস্ট্রি করে দেব। আমরা যেহেতু ২০১৭ সাল থেকে তাদেরকে প্রচন্ড বিশ্বাস করে আসছি সেহেতু আমরা সরল বিশ্বাসের কারনে ১৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা আসামীদের কাছ থেকে না পেয়েও তাদের গত ৪ ফেব্রুয়ারি'২০ সম্পত্তিটি রেজিস্ট্রি করে দেই । রেজিস্ট্রি দেয়ার পর আমার ভাই ওয়াজেদ আলীর স্ত্রী সেদিন-ই মারা যাওয়ায় পরেরদিন ৫ ফেব্রুয়ারি'২০ লাশ দাফন-কাফন হওয়ায় কারনে আমরা সেদিন ভাবনা রিয়েল এস্টেটের জমি রেজিস্ট্রি নিতে পারিনি। পরবর্তীতে আমরা বিভিন্ন সময় ভাবনা রিয়েল এস্টেটের জমি প্রতিশ্রুতি মত আমাদের নামে রেজিস্ট্রি দিতে বললে তারা দেব দিচ্ছি করে সময় পার করেন। ফলে আমরা একজন আইনজীবীর মাধ্যমে ১৩ জুলাই'২০ বকুল ও মামুনকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠাই। সর্বশেষ গত ১০ আগষ্ট'২১ রাত ৮টার সময় আমাদের বাড়ীতে বকুল আসলে আমরা তার কাছে পাওনা ১৪ লাখ ৬৫ হাজার টাকা চাইলে তিনি দিতে অস্বীকার করেন। তারা তিনজন পরস্পর যোগসাজশে আমাদের সাথে প্রতারনার মাধ্যমে বিশ্বাস ভঙ্গের অপরাধ করেছেন। এদিকে আদালতে মামলা চলা অবস্থাতেও তারা বারংবার আমাদের সম্পত্তিটি জবর দখলের চেষ্টা করছে এবং আমাদের বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
জমির মালিক পক্ষ থেকে ফারজানা হক রাসিক মেয়র বরাবর আবেদন করলে তিনি ১৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন আনার'কে প্রধান করে চার সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত ও সালিশ কমিটি গঠন করে দেন। তদন্ত কমিটি উভয়পক্ষকে ডাকলে বিবাদী পক্ষ সালিশ কমিটির কথা অমান্য করায় সেদিন সালিশ ও তদন্ত মূলতবি করা হয় এবং বাদীকে এ বিষয়ে একটি প্রত্যায়ন পত্র দেয়া হয়। এছাড়াও আদালতে করা মামলার তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয় বিসিক পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই দুলাল'কে।
এ দিকে এমদাদুল হক রোকন, মোতাহের হোসেন বকুল ও আবুল বাশার তালুকদার মামুন বলেন, বিষয়টি মিথ্যা, আমরা রেজিস্ট্রি নেয়ার সময় বেশীরভাগ টাকা পরিশোধ করেছি। অল্প কিছু টাকা তারা পাবেন যা জমি দখল পেলে আমরা তাদের দিয়ে দেব।
বিষয়টি নিয়ে রাসিক ১৪ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনোয়ার হোসেন আনার বলেন, সিটি কর্পোরেশন এ আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামীতে একটি তারিখ নির্ধারন করা হবে। এতে উভয় পক্ষকে ডেকে সমস্ত ঘটনা শুনে আমরা সমাধানের চেষ্টা করবো।